স্যামুয়েল বেকেট-এর কবিতা : অনুবাদ – মলয় রায়চৌধুরী

স্যামুয়েল বেকেট-এর কবিতা । অনুবাদ : মলয় রায়চৌধুরী

ক্যাসক্যানডো ( স্বরহ্রাস ও লয়ের মন্দিভবন )

কেন নয় নিছক হতাশার

উপলক্ষের

শব্দস্খলন     

বন্ধ্যা হওয়ার চেয়ে নিষ্ফলা করা কি ভালো নয়

তুমি যাবার পর সময় এতো বেশি গুরুভার

ওরা সব সময় তাড়াতাড়ি টানতে আরম্ভ করবে

চাহিদার বিছানাকে চোখ বুজে নোঙোর আঁকড়াবে

পুরোনো প্রেমের হাড়গুলো আনবে তুলে

একসময়ে গর্তগুলো তোমার চোখের মতন ভরা

সব সবসময় কখনও-নয়ের চেয়ে ভালো তাড়াতাড়ি

কালো চাহিদা ওদের মুখে প্রোক্ষণ করছে

আবার বলছে নয় দিন ভাসিয়ে রাখেনি ভালোবাসা

নয় মাসও নয়

নয় জীবনও নয়

আবার বলছে

তুমি আমাকে না পড়ালে আমি শিখবো না

আবার বলছে কোথাও শেষ আছে

এমনকি শেষবারেরগুলো

শেষবারের ভিক্ষা যাচ্ঞার

শেষবারের ভালোবাসার

জানবার না জানবার ভান করার

একটা শেষ এমনকি শেষবারগুলোর বলা

তুমি আমায় ভালো না বাসলে আমি ভালোবাসা পাবো না

আমি তোমাকে ভালো না বাসলে আমি ভালোবাসবো না

হৃদয়ে আবার বাসি শব্দের মন্হন

প্রেম প্রেম প্রেম পুরোনো মজ্জনকারীর ধপ

অপরিবর্তনীয়ের পেষাই

শব্দের ঘোল

আবার উৎকন্ঠিত

না ভালোবাসার

ভালোবাসার আর তুমি নও

ভালোবাসা পাওয়া আর তোমার দ্বারা নয়

জানবার না জানবার ভান করার

ভান করার

আমি আর বাদবাকি সবাই যারা তোমাকে ভালোবাসবে

যদি তোমায় ভালোবাসে

যদি না তোমাকে ভালোবাসে

 সেরেনা – ১

প্রাচীন মহিয়ান ব্রিটিশ মিউজিয়াম ছাড়া

টেলস আর আরেটিনো

রিজেন্ট পার্কের বুকে ফ্লক্সফুলের গোছা

বজ্রপাতের তলায় পটপট করে ওঠে

রক্তিম সুন্দরী আমাদের জগতে মৃত মাছ ভেসে যায়

সবকিছুই দেবতায় ভরা

চেপে রাখা আর রক্ত বেরোচ্ছে

একটা বাবুই পাখি ছোটো কমলালেবু ডাইনি যত্ন নিচ্ছে বিগতের

শকুন তেমনই তার ঘেয়ো ময়ালে

তাকিয়ে থাকে বাঁদর-পাহাড়ের ওই পারে হাতিরা

আয়ারল্যাণ্ড

তাদের পুরোনো বাড়ি গভীর গিরিখাতে আলো লতিয়ে নামে

আমাকে চুষে নেয় একান্তে ওই পুরোনো আস্হাভাজন পর্যন্ত

জর্জ কসরতকর্তা জ্বলন্ত কিন্তু

আহ পথের ওই পারে এক যোগকারী

মেয়েটি তার ইঁদুরকে কেটে খুলে ফ্যালে

তুষারের মতন শাদা

তার ঝকঝকে উনোনে কোষের টানাঠেলা

যুদ্ধ শ্রম

আহ বাবা বাবা স্বর্গের ওই শিল্প

আবিষ্কার করি স্ফটিক প্রাসাদের দখল নিচ্ছে

প্রিমরোজ পাহাড় থেকে আশীর্বাদপূত দ্বীপের জন্য

হায় আমি নিশ্চয়ই সেইরকম লোক

ফলে কেনউডে কে আমাকে খুঁজে পাবে

ঝোপের মাঝে আমার শ্বাস আটক

সবচেয়ে বেশি খুঁড়ে-তোলা প্রেমিকদের থেকে আর কেউ নয়

আমি নিজেকে বিস্মিত করি অনেক এক চিমনির কবজায়

টাওয়ার ব্রিজকে প্রণিপাতের জন্য

শহরে ঢোকা আর বেরোনো সাপের বালিকা-নমস্কার

সন্ধ্যা পর্যন্ত এক হালকা

গর্বে অন্ধ

ব্রিজের দুই দিকের স্কার্ফকে পাশে সরায়

তারপর অ্যামবুলেন্সের ধূসর গ্রাসে

দীর্ঘশ্বাস ঢেউয়ের কিনারায় স্পন্দিত

তারপর আমি নিজেকে জড়িয়ে ধরি পাজিদের মাঝে

যতক্ষণ না একজন হাঘরে নিজের শনাক্ত চোখদুটোর বিস্ফোরণ ঘটায়

দাবি করে আয়নার সঙ্গে আমি কী করেছি

বিবাহিত পুরুষদের বাড়ির তলায় আমি ভীত ক্রোধে কুঁদে দিই

ব্লাডি টাওয়ার

রেনের মস্তো পালোয়ান দূর থেকে পূর্ণ গতিতে আমাকে পেঁদায়

আর গালাগাল দেয় দিনটাকে খাঁচায় হাঁফাচ্ছে পাটাতনে

সমুজ্বল ভস্মাধারের তলায়

আমি ডিফো হয়ে জন্মাইনি

কিন্তু কেনউডে

কে আমাকে খুঁজে পাবে

আমার ভাই মাছি

বাড়ির সাধারণ মাছি

অন্ধকার থেকে আলোয় হামাগুড়ি দিয়ে আসছে

সূর্যে নিজের জায়গা বেঁধে ফ্যালে

ছয়টা পা রগড়ায়

নিজের পাটাতনে ভারসাম্যে মজা করে

এটা ওর জীবনের হেমন্ত

ও টাইফয়েড আর ধনদৌলত বিলি করতে পারেনি



About anubadak

আমি একজন অনুবাদক । এতাবৎ রেঁবো, বদল্যার, ককতো, জারা, সঁদরা, দালি, গিন্সবার্গ, লোরকা, ম্যানদেলস্টাম, আখমাতোভা, মায়াকভস্কি, নেরুদা, ফেরলিংঘেট্টি প্রমুখ অনুবাদ করেছি ।
This entry was posted in Uncategorized. Bookmark the permalink.

এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান